
বইপাড়ার আগন্তুক
অনেকক্ষণ না হলেও কলকাতার জনস্রোতে বেমানান হয়ে যাওয়ার মত সময় ধরে থমকে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা। স্বভাবজাত ছটফটে সঙ্গিনীর এই অদ্ভুত স্থিরতা স্বাভবিকভাবেই চোখে পড়ে ছেলেটার, “কী রে? দাঁড়িয়ে আছিস কেন?” উত্তরের পরিবর্তে একটা অন্যমনস্ক “মহুঁ?” স্বর ভেসে আসে মেয়েটার গলা থেকে। ছেলেটা আবারও প্রশ্ন করে, “কিছু ভাবছিস?”
– “একটা কথা বলবো?”
– “কেন? অনেক ক’টা কথা বল?”
– “ধুস! বাজে কথা না বললেই নয় তোর?”
– “তাও সেই আমাকেই বলতে আসিস।”
– “চুলোয় যাক আমার কথা!”
শীতের বিদায়বেলাতেও বসন্ত আসেনি কলেজ স্ট্রিটের রাস্তায়। তাই আজকের বিকেল ঠিক সূর্যাস্তের রক্তিম হয়ে উঠতে পারেনি, বরং বৈরাগীর গেরুয়ার সাথে খানিক ছাইভষ্ম মেশালে যে রং আসে, সেই রূপেই আজকের দিনের শেষ ঘণ্টা সাজছে। কিন্তু প্রেমিকার অভিমান আবহাওয়া মানে কি? সে তো ছুতোই খোঁজে মুখের আদলে নিজের অস্তিত্ব মেলে ধরার।
আপাতত প্রেমিক হৃদয় তা ঠাহর করতে পেরেছে। তার মানভাঙানিয়া স্বর জানতে চায়, “কী রে, বললি না?”
সময়েরও বালাই বড়! নিজের চিরধ্রুবক স্রোতের ব্যতিক্রম ঘটাতে চায়না সে’ও চট করে। তবুও তাকে থমকে দাঁড়াতে হয়। এই শহর; দেশ; বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড বা মহাবিশ্বের জন্য না হলেও এই আগন্তুক যুগলের জন্য তাকে নিয়ম শিথিল করতে হয়।
আবারও মানভাঙানিয়া বলে, “বল না! বল না!”
এতক্ষণে অভিমান ক্লান্ত হয়ে দীর্ঘশ্বাসে বেরিয়ে আসে। ছেলেমানুষী থেকে হুট করে গাম্ভীর্যে সরে আসে মেয়েটার অভিব্যক্তি ….
“আচ্ছা? এই এতো বইয়ের ভিড়ে একদিন আমারও নাম থাকবে বল? লোকে দাম দিয়ে আমার গল্প শুনতে চাইবে তখন?”
চারপাশের কোলাহল কমে আসে ওদের মাঝে। দু-জোড়া চোখের সামনে খেলে যায় অন্য বাস্তবতা। বৈপ্লবিক কিছু না হলেও নেহাত তাৎপর্যহীন বলা চলে না তাকে।
– “থাকবে তো?”
– “হুম্ থাকবে…. তবে কী জানিস তো..”
– “কী?”
অনুভূতির রাজপথে দোলাচলের যানজট কাটিয়ে প্রেমিকার জিজ্ঞাসু চোখ এখন কৌতূহলের অলিগলি ধরেছে, উত্তর খুঁজছে সমকোণের দূরত্বে থাকা প্রেমিকের শূন্য দৃষ্টিতে-
ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে চেনা ঠোঁটের ভাঁজ থেকে অচেনা কিছুর সন্ধান পাওয়ার।
“সে হতে হতে আমরা আর বেঁচে থাকবো বলে সন্দেহ!” ছেলেটা বলে ওঠে, “লোকজন সময় থাকতে মূল্য দেয় না।”
– “তা বটে!”
– “কথাটা খারাপ ভাবে বললাম…”
– “খারাপ কিছু বলিসনি।”
– “তোকে নিরুৎসাহী করিনি বিশ্বাস কর। কিন্তু এটা ঘটনা…”
– “জানি রে। আমিও যে খুব আশা রাখি তা নয়। ব্যস….মনে হল।”
– “হুম। তাই বলে এই না যে কালকে মরে পরশু ফেমাস হব!”
– “হ্যাঁ। মরার আগেও কিছু করার মতো করে মরতে হবে।”
– “একদম!”
এসব চলতে চলতে সবার অলক্ষ্যে দুটো পাতা নড়ে বা এতদিন আবিষ্কারের প্রত্যাশী কোনো অজ্ঞাত তারার মৃত্যু হয়।
কার যায় আসে?
– “কার?”
– “আমাদের!”
দুজনেই আরও কিছুক্ষন বেমানান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে জনস্রোতে স্রোতস্বিনী তিলোত্তমা নগরীর বইপাড়ার এক প্রান্তে। “মাথাটা ধরে আছে, চা খাবি?” ছেলেটা প্রশ্ন করে, মেয়েটা সম্মতি দেয় ঘাড় নাড়িয়ে। তারপর হাতে হাত ধরে ফেরৎ আসে সময় আর জনস্রোতে।
……………………………………………………
চায়ের দোকান অবধি আসতে বেশ কিছুটা পেরোতে হয় দুজনকে, ফলত আজকের বইপাড়ার আমেজটা অনেকটাই জড়িয়ে ধরতে পেরেছে ওদের।
যদিও ব্যতিক্রমী কিছু না-
শিক্ষাজীবনের নানা ধাপ উৎরানোর প্রত্যাশায় থাকা পড়ুয়াদের ভীড়, কলেজের গেটের সামনে সিগারেট মাখা আড্ডা, সারি সারি দোকানে থাকা বই দোকানিদের ভদ্রস্থ জোরাজুরি “দাদা আসুন কী বই লাগবে! দিদিভাই এদিকে সব আছে!” ইত্যাদি সব।
এরই মাঝে একটা ট্রাম টিং টিং শব্দ করতে করতে চলে গেল। ওরা দুজন তখন চায়ের দোকানের একটা পাশে দাঁড়িয়ে।
মেয়েটা রাস্তার মোড়ের দিকে মাথা ঘুরিয়ে একবার তাকিয়ে দেখলো। মাথায় থাকা ভাবনাগুলোর নিবৃত্তি হয়নি তখনও ওর। তাই আরও একবার দৃষ্টিগোচর বইগুলোর মলাট নিরীক্ষণ করা শুরু করলো।
নাহ্! আর চোখ যাচ্ছে না।
চেষ্টা থামিয়ে দিলো মেয়েটা। মাথার ওপর চশমা তুলে খানিক চোখ রগড়ে নিল। তারপর স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরতে সময় আরও খানিক সময় লাগে।
“বলছি ওই টুলটায় গিয়ে একটু বসি বুঝলি।” মেয়েটা বলে ওঠে। “শরীর খারাপ করছে?” ছেলেটা জানতে চায়। “না না! এমনি।” মেয়েটা আশ্বস্ত করে সেই টুলের দিকে এগিয়ে যায়।
বসেও তেমন জুত পেল না মেয়েটা। “বাঁকা নাকি টুলের তক্তাটা?” মনের বিরক্তি মনে রেখে উঠে দাঁড়িয়ে দেখলো, বেবি পিংক কালারের কাগজ মলাট মোড়া একটা বস্তু টুলের ওপর রাখা ছিলো।
বই? না খাতা? নাকি ডায়রি? দেখে বোঝারও উপায় নেই। আর এলোই বা কোত্থেকে? মেয়েটা আরেকবার পাশাপাশি থাকা বইয়ের দোকানগুলো কে দেখলো। বুঝলো; শুধু আদলে না, মালিকানা দাবি না করার মতো দুরত্বেও পার্থক্য রয়েছে।
কৌতূহলই বা কতক্ষণ তর সয়?
মেয়েটা আর না বেশি ভেবে বইয়ের একটা পাতা খুলে পড়তে লাগে। তাতে লেখা,
– “আমার মতো পাগল কে নিতে পারবি?”
– “আমাকে দেখে তোর স্বাভাবিক মনে হয়?”
নাহ্, গোলাপী রঙের মলাট মোড়া বইয়ের পাতায় নিজেদের পূর্বরাগ পর্যায়ের কথোপকথন দেখে একটুও চমকায়নি মেয়েটা। চমকায়নি তার পরের পাতা গুলোতে নিজেদের প্রথম হাত ধরা, প্রথম চুমু খাওয়া বা এই অবধি নিজেদের কাছে আসার বিবরণ দেখেও।
কোনো কারণ ও নেই থতমত খাওয়ার! এ যে ওরই অন্তরের প্রেম আর মনের মাধুরী মেশানো দুনিয়ার মলাট বন্দী রূপ। ওর ভালো থাকার অবলম্বন; স্বপ্ন পূরণের পাথেয়–
ওর বেঁচে থাকার কারণ!
মেয়েটা আরেকটু খুঁজে বার করে আরেকটা পাতা, যেখানে আখ্যায়িত আজকের মতোই এক বিকেলবেলা। সে বিকেলে নদীর ধার ছিল, বসন্তের প্রথম দখিনা হাওয়ার জানান ছিল,
যুগল হৃদয়ে সেদিন নিভৃতের শান্তি ছিল।
বেশ কিছুক্ষণ একটা ঘোরে বুঁদ হয়ে থাকার পর মুখ তুলে তাকালো মেয়েটা। এবার চমকে উঠলো, এ কোথায় চলে এসছে ও? কোথায় ওর পায়ের তলায় কলেজ স্ট্রিটের রাস্তা? মাথার ওপর বিকেলের আকাশ? চারপাশের বাস গাড়ি? কোথায় ওর প্রেমিক?
এখানে কিছু নেই?
আছে…
এ ত্রিমাত্রিক হিসাব বহির্ভূত জগৎ! এখানে সাতরঙা হিসাবের বাইরে রং আছে, আছে সপ্তসুরের বাইরের সুর বাঁধা গান। এখানে আলোও অভ্রের ঝিকিমিকি মাখে। এ জায়গা বুঝলে সময়েরও করুণা পাওয়া যায়, অনন্তেও স্থান মেলে…।
মেয়েটার মনে হল বুঝি হাতে থাকা বইটার সহায় নিয়ে এই মায়াবী দুনিয়াটায় ভেসে আছে ও। তবে কোনোমতে নয়, বেশ একটা ভারহীন স্বাধীনতায় ভাসছে ও। আরেকবার বইয়ের একটা পাতা খুলে দেখে ও, সেখানে লেখা,
“কী রে! কী হল তোর? শরীর খারাপ থাকলে বল! কী হয়েছে? কই!?”
ছেলেটা এবার ঝাকুনি দিয়ে ডাকলো, মেয়েটার সম্বিত ফিরলো। “কী হল? কিছু হয়েছে তোর? তখন থেকে কেমন একটা করছিস! বাড়ি যাবি?” ছেলেটার গলায় তখনও দুশ্চিন্তা। “মাথা ঘুরছে? মুখে চোখে জল নিবি?” “না না! কিছু হয়নি আমার। বিশ্বাস কর!” মেয়েটা হাত নাড়িয়ে আশ্বস্ত করতে চায়।
– “তাহলে? এরকম করছিস কেন?”
– “ওই একটু জোনড আউট হয়ে গেছিলাম।”
– “সিরিয়াসলি!! কে এই মেয়েটা!”
– “আরে না রে মাথাটাও ধরে আছে।”
– “চল চা’টা খা।”
দুই মাটির ভাঁড় তখন চায়ের ধোঁয়ার হাতছানিতে ওদের দুজন কে ডাকছে।
চা শেষের দিকে। মেয়েটা ঘাড় কাত করে তাকালো সারি দিয়ে থাকা বইয়ের দোকানগুলোর দিকে। সেই দেখে সচেতন প্রেমিক প্রশ্ন করে, “কী দেখছিস?” প্রেমিকা বলে, “একবার ওদিকটা যাবি?” গলায় হালকা আবদার। হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে সন্দেহসূচক মুখ করে ছেলেটা, “আজ আর হবে না বুঝলি। বরং যেটা করতে এসছি করে সেটা সেরে বাড়ি ফিরি আজকের মতো।” দীর্ঘশ্বাসে আক্ষেপ ছেড়ে উত্তর দেয় মেয়েটা, “বেশ, তাই হোক।”
হাত থেকে চায়ের ভাঁড় ফেলে গন্তব্যে হাঁটা দেয় দুজন। ঠিকই বলেছে ছেলেটা, এতক্ষণে অনেকটাই অন্ধকার হয়ে এসছে কলেজ স্ট্রিটের রাস্তায়; এখন আশেপাশের গলিতে উঁকি দিলে হ্যালোজনের দেখা পাওয়া যাবে। “আজও যদি টেনইয়ার্স সলিউশনটা না পাওয়া যায়?” মেয়েটা হুট করে প্রশ্ন করে, “আগেরদিনের মতো বেকার আসা হবে তখন।”
– “কাল হোস্টেলের ছেলেগুলো এসছিল, ওরা কিনে নিয়ে গেছে দেখেই আজ এলাম।”
– “ঠিক আছে। পেলেই ভালো!”
কোথাও হ্যালোজেন-এলইডির সংঘাত; কোথাও একলসেরে আঁধার, পড়তি সন্ধ্যায় বইপাড়ার এ প্রান্তে এক গোলমেলে বৈপরীত্যে বিরাজমান। তারই মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দুই নবীন প্রাণ।
দুজনেই দেশের ভবিষ্যত, আগামীর স্বপ্ন, সমাজের আশা কিংবা পরিবারের গর্ব। আর?
এতকিছুর মাঝেও ছেলেটা থামেনি। অথচ মেয়েটার মতোই তারও মাথার ভেতর আরেকটা দুনিয়া আছে, দু’চোখ জুড়ে স্বপ্ন আছে। ও কি পারবে কোনোদিন সেগুলোকে নিজের মতো করে আয়তকার ফ্রেমে বন্দী করতে?
ভাবতে ভাবতে ধীর হয়ে আসে হাঁটার গতি। তবু ছেলেটা থামেনা, থমকে দাঁড়ালে দেখতে পেত;
সময়ও ওর জন্য ধীর হয়ে এসেছে…।
কয়েক মিটার ছেড়ে ছেড়ে রাস্তার দুই ধারে কিছু বড় গাছ। কান না পাতলেও সেখান থেকে দিন শেষে বাসায় ফেরা পাখিদের ক্যাঁচরম্যাচর শোনা যায়। গাছেদের শামিয়ানার নিচে রাস্তা, সেখানে ঘরফিরতি যাত্রীদের অযান্ত্রিক তাগিদ বয়ে পরপর ছুটে চলেছে বিশ্বকর্মার যান্ত্রিক আশীর্বাদ প্রাপ্ত বাহনেরা। এরই মাঝে এক হ্যালোজেন পরিধি ছাড়িয়ে ছেলেটার খেয়াল হল, “এই মেয়ে গেল কোথায়?” এই ভেবে পিছন ফিরে তাকায়। কাউকে দেখতে না পেয়ে আবারও উৎকন্ঠা ঘিরে ধরে ওকে, সামনের দিকে তাকায়।
এতক্ষণে ছেলেটাকে থমকানোর মতো কিছু চোখের সামনে ঘটে।
কোলাহল থেমে আসে, ভীষণ চেনা টুংটাং সুরে শান্ত হয় শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। একদম নিখুঁত আলো-আঁধারির অনুপাতে তৈরি হওয়া মায়াবী পরিবেশে হেঁটে চলেছে এক এলোকেশী মূর্তি।
কে সে? কোনো দৈবিক স্বপ্নাদেশ? নাকি পরীর দুনিয়ার রাজকন্যা? সে কি তার গল্পের নায়িকা, নাকি তার অভ্যাস-রূপী প্রেমিকা!?
এলোকেশী মূর্তি পিছন ফিরে তাকায়, হাঁটার গতি উল্টো দিকে ঘোরায়। ম্লান হাসি বেরিয়ে আসে ছেলেটার অন্তর থেকে। নিষ্ঠুরাচরণ বটে! এতক্ষণে তার সময় হল প্রেমিকের নীরব আকুতির সাড়া দেওয়ার!?
সব পারে ছেলেটা, শুধু নিজের স্বপ্ন আর স্বপ্নচারিণীর থেকে এগিয়ে যেতে পারে না।
আস্তে আস্তে শব্দহারা হয়ে আসে ও , চারপাশটাও ঘোলাটে হয়ে আসে। ইশ! চোখ দুটো ওর ক্যামেরা হলেই তো পারতো! এরকম মুহূর্তবন্দির কোলাজ করে দেখাতে পারতো প্রেমিকা কে, শান্তি পেত ওর বুকের ভেতর টা –
একটু হলেও বোঝাতে পারতো চেতনার কতটা জুড়ে ওই একজনের মুখ আঁকা আছে!
এরমাঝেই বুকের বামপাশ ঘেঁসে একটা কোমল স্পর্শ পেল ছেলেটা। হৃৎপিন্ডের ধুকপুকানির পথ ধরে নিচের দিকে তাকায়…
“কী রে? তোর এবার কী হল?” চেনা গলার আওয়াজ পেয়ে বাস্তবে ফিরে আসে ছেলেটা।
উত্তর না পেয়ে মেয়েটা আবার জিজ্ঞেস করে, “কিছু হয়েছে?”
“অ্যাঁ?”
বলতে বলতে দমকা হাওয়ার দৌলতে বুঝতে পারে ছেলেটা, চোখের কোণ ভিজে এসেছে অজান্তেই। কিন্তু নিজেকে আড়াল করার মতো সময় বা শব্দ সাজিয়ে মিথ্যা কৈফিয়ত দেওয়ার ক্ষমতা, কোনোটাই নেই ওর এই মুহূর্তে।
তবে কী করা উচিত ওর? নাহ্, ছেলেটাকে কিছু করতে হল না।
চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই মেয়েটা আলতো করে ওর হাত ধরে, সচেতন স্বরে বলে, “চল।”
–“ হুম?”
–“টেন ইয়ার্স? কিনবি তো?”
– “হুম হুম…চল..”
সময় আবার ধ্রুবক গতি নেয়। পড়তি সন্ধ্যার আলো আঁধারি মেখে দুই আগন্তুক হেঁটে চললো নিজেদের লক্ষ্যে…